আমাদের পরবর্তী সংখ্যায় লেখা পাঠাতে চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ এ ইনবক্স করুন অথবা ইমেইল করুন Ghuri2014@hotmail.com এই ঠিকানায়।

মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৪

শঙ্খিনী - অভ্রভেদী নীল (২য় সংখ্যা)



 

শেষ বিকেলে আকাশের নীল গোধূলির কমলা-সোনালী-গোলাপি রঙে বিলীন হতে বসেছে
  শরতের অস্তাচল এমনই হয় মনটা দুশ্চিন্তায় ছেয়ে আছেতবুও আকাশে ক্রিমসন রঙের ঐ অবাক বিক্ষেপণ আমাকে থমকে দিল, দাঁড়িয়ে পড়ে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম পশ্চিম আকাশে, চোখ জুড়িয়ে এল
 নৈর্ঋতের অফিসটা এত সুন্দর জায়গায়! আজ ওরসাথে দেখা করতে হবে বাংলার সবচেয়ে সুন্দর নদী চিত্রার পাড়ে অফিস ভবনটা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নড়াইলওর অফিসরুমে ঢোকার সময় আমি সাধারনতঃ নক করিনা, তবে আজ কি মনে করে করলাম ভেতর থেকে একটা মিষ্টি শান্ত গলা ভেসে এল,
কাম ইন 
ডোর ক্লোজার বডি লাগানো দরজাটা একটু ফাঁক করতেই ভিরমি খেলাম একেবারে বটমস আপ, নৈর্ঋত সর্বাঙ্গাসনে, ওর যোগব্যায়ামের প্রিয় আসন! কোথাও সামান্য একটু জায়গা পেলেই ও অনেক আসন অনায়াসে করতে পারে, এখন যেমন সোফার ওপর
ওর মতে শরীর মজবুত না রাখতে পারলে, মস্তিষ্ক ভালো আউটপুট দেয় না বুনিয়াদি ট্রেনিঙে আমরা সবাই ওর সুস্বাস্থ্য আর শরীরী গড়ন দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম; একেবারে মাইকেল এঞ্জেলোর ডেভিড ও সে সময় একটা জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর আমি অন্য জেলায় পুলিশের এএসপি, দুজনেই প্রবেশনার সেই ট্রেনিঙেই প্রথম পরিচয় একটু নির্লিপ্ত; কিন্তু ওর বহুমাত্রিকতায় মুগ্ধ না হয়ে পারিনি, বহুমাত্রিকতা বললে কম বলা হবে, বলতে হয় সর্বমাত্রিকতা ওর সব ট্রেইটের কথা বলতে গেলে দিস্তা দিস্তা কাগজ লাগবে, আমি গল্পের ফাঁকে ফাঁকে একটু আধটু বলব সেসব রাজ্যের গুণ থাকা সত্ত্বেও একেবারে মাটির মানুষের মত আচরণ, কিন্তু সে বলে, ও নাকি আসলে খুবই কমপ্লিকেটেড পরে ঘটনাচক্রে আমরা একই স্টেশনে পোস্টিং পেয়ে যাই
 তৌফিক, বসো, আর আধ মিনিট
 চোখ বুজেই আমাকে ঠিক চিনে ফেলেছে ঠিক ত্রিশ সেকেন্ড পর ওর পা নিচে নামলো, মাথা উপরে চুলটা ঠিক করে বলল,
 ভাবছ  কিভাবে চিনলাম তোমাকে? তোমার পুলিশ বুটের টক টক আওয়াজ আর তোমার সিলুয়েট দেখে বন্ধ থাকলেও মানুষের চোখ দিনের বেলায় আলো আঁধারের পার্থক্য আবছা ধরতে পারে এজন্যই অন্ধকারে ঘুম ভাল হয় দরজা খুলতেই দিনের আলোর ভেতর তোমার ছয় দুই এর শরীরটার একটা অবয়ব বন্ধ চোখেই টের পাচ্ছিলাম আশপাশে এত লম্বা আর কেউ নাই তা বল, কি মনে করে? বোঝাই যাচ্ছে চিন্তায় আছ, তোমার চিরাচারিত রিল্যাক্স মুডটা দেখছি না
 ‘ ‘সমস্যা একটা হয়েছে, আন্দাজ কর দেখি!’, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লাম আমি
  সমস্যাটা সম্ভবতঃ তোমার বসের, মূলতঃ তোমার না’, গভীর শ্বাস নিয়ে আবার ছেড়ে বলল নৃ, ব্রিদিং এক্সারসাইজ করছে মনে হয় নৃ নৈর্ঋতের ডাক নাম
 কিভাবে?’, এবার একটু অবাক হলাম
 কেননা কদিন ধরে বসকে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করছ, কিন্তু পারছ নাএখন নিশ্চয় একটা সুযোগ এসেছে! চটজলদি কাজে লাগাতে ছুটে এসেছ আর তাছাড়া তোমার প্যান্টের পকেটের ভেতর ফুলে থাকা এন্টাসিডের ব্লিস্টার দেখে বুঝা যাচ্ছে খাওয়া দাওয়াও ঠিক মত হচ্ছে না, রাতজাগাও হচ্ছে ব্যাপক
কথাটা মিথ্যে না কিছু সমস্যা হয়েছিল ক্যারিয়ারটা একটু চাঙাতে বসের সুদৃষ্টি দরকার ছিল প্রচুর খেটেছি কিন্তু গোঁয়ার বসের মন কিছুতেই নরম হচ্ছে না সমস্যাটা আসলেই বসের আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি সমস্যার কথা তুলে ফেললাম,
নদীতে লাশ ভেসে যাবার কথা শুনেছ নিশ্চয়? প্রায় প্রতি হপ্তাই ভেসে যাচ্ছে কিন্তু কোন কিনারা করতে পারছি না থামছেও না আজীব মুসীবত বস হেডকোয়ার্টারে কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারছে না কাল নিয়ে ছয়টা হল মাত্র চার মাসে এলাকাটা শান্তই ছিল হঠাত এ কি উৎপাত?’
 অটোপ্সি রিপোর্ট কি বলে?’ নৈর্ঋত এই একটা বিষয়েই ফোকাস করল 
লাশগুলো সব কটাই জুয়ান ছেলেদের, বয়স এই ধর পঁচিশ কুড়ির ভেতর, মোটামুটি দেখতে ভাল সকলেই, মৃত্যুর কারণও সব একই রকম মনে হচ্ছে ড্রাউনিং অর্থাৎ ডুবে মৃত্যু! কিন্তু  তদন্ত বলছে তিনটা ভিক্টিম সাঁতার জানত
 কোন ধস্তাধস্তি?’ একটা ভুরু উঁচিয়ে শুধাল নৃ 
ও আমার জন্য গ্রীন টি বানাচ্ছে নিজ হাতে এসব ছোট খাট কাজে ও কর্মচারী খাটায় না
নাহ! বিষক্রিয়ার চিহ্নও নাই, স্টমাক ক্লিন কয়েকটা বায়োকেমিক্যাল টেস্ট  করতে পাঠিয়েছি ঢাকায় কবে আসবে তার ঠিক নাই বুঝো তো এটা তো আর এনওয়াইপিডি (NYPD) বা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড না
 কাল যে মারা গেছে তার লাশ আছে?’
 হ্যাঁ, এখনও অটপ্সি হয়নি আজ রাতে হবার কথা
 চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম স্বাদহীন চা, কিন্তু বিকেলের পর ও ক্যাফেইনযুক্ত চা খায় না, দেয়ও না
একটু দেখা যায়’?
যাবে না কেন? চল সুরৎ হালতো করেছে তোমাদেরই আরেক ম্যাজিস্ট্রেট
হুমম আজ সকালে ডিসি স্যারের রুমে আলাপ হচ্ছিল সানোয়ার গেছিল’, বলতে বলেতে ফর্মাল জামাটা পালটে ওর অফিসরুমেই রাখা একটা টি শার্ট পরে নিল আমরা দুজনে উঠে পড়লাম বাইরে এসে আবার কিছুক্ষণ সূর্যাস্তের শেষ রক্তরাগ দেখলাম নৃর চোখে বিস্ময় প্রতিবারই ও বিস্মিত হয় এমন দৃশ্যে বলে প্রতিটা গোধূলি আলাদা কারও সাথে কারও পুরাপুরি মিল নেই ডাবল কেবিন পিকআপটা চালিয়ে সোজা চলে গেলাম মর্গে আপাততঃ ফরমালিন ছিটিয়ে লাশটা ক্যাডাভর ফ্রিজে রাখা হয়েছে বের করালাম মৃতের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি তবে পঁচিশ ছাব্বিশের যুবক, চেহারা সুন্দর
স্ট্রেচারে শোয়ান লাশটার মুখের দিকে তাকাল নৃ ঘুম ঘুম ভাব তবে মুখে পেশী শিথিল না একটা শক্ত ভাবহাতে গ্লাভস পরে চোখটা আঙ্গুল দিয়ে উপরে তুলল নৃ, চুলগুলো নেড়েচেড়ে দেখল কোন অস্বাভাবিকতা নেই হাতের বাইসেপ আর পায়ের কাফ মাসলে আঙ্গুল দাবাল, কতটুকু গভীরে যাচ্ছে তা খেয়াল করল মুখটা খোলা যাচ্ছিল না, চোয়াল শক্ত হয়ে আটকে গেছে স্প্যাচুলা দিয়ে ফাঁক করল দাঁতের পাটি দুটো কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখল, তারপর ঘ্রাণ নিয়ে বলল, পানিতে সব ধুয়ে গেছে মজার ব্যাপার হল, নৃ প্রকৌশলের ছাত্র বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বুয়েটে পড়েছে ও কিন্তু অ্যানাটমি আর ফরেনসিকে যেকোন প্রফেসরকে পাল্লা দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস ওর ঘরে আমি প্রচুর মেডিকেলের বই দেখেছি ঔষধতত্ত্ব নিয়ে কিছু লেখালেখিও করেছে ও, আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের ধাপ্পা নিয়ে
 তোমার ম্যাগ্নিফায়িং গ্লাসটা একটু দরকার’, বলে আমার মোটা কাঁচের চশমাটা খুলে নিল ও  বাইফোকালটার নিচের লেন্সটা দিয়ে লাশের সারাটা গা পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করল
তৌফিক, শুধু তোমার না, কোন কোন প্রানির ন্যাচরল বাইফোকাল হয়, তা জান? থার্মোনেক্টাস মারমোরেটাস নামে একটা ডাইভিং বিটল আছে, মানে, জলজ গুবরে পোকা আরকি ওদের চোখে দুটো আলাদা ফোকাল প্লেনের রেটিনা পাওয়া গেছে...বলতে বলতে পায়ের কাছে এসে থমকে গেল নৃ 
লাশটা লতা পাতায় পেঁচিয়ে গেছিল, পানির কলমি টলমিতে’, টানা হেঁচড়ার সময় একটু ছড়েছে, লাশটা ভেসে চলে যাচ্ছিল, লতায় আটকে যায় লোকজন দেখার পরপরই, তখন তারা তুলে ফেলে আমাদের খবর দেয়, একটা টহল টিম ছিল ওখানেই 
কিন্তু কল্মিলতায় তো কাঁটা হয় না, পাঙ্কচার মনে হচ্ছে, অবশ্য পদ্মলতায় কণ্টক থাকে, ঐ যে আছে না, কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে...আমি দেখলাম, পাশাপাশি দুটো ছিদ্র, দেখাই যায় না প্রায়, লাশটা একটু ফোলাতে আরও মিলিয়ে গেছে, কিন্তু নৃর চোখ এড়ায়নি মোবাইলের টর্চটা জ্বালিয়ে আরও ভাল করে দেখল ও ছিদ্রের চারপাশে কিছু আছে বলে মনে হল না 
সাপে কাটলে তো একটু কালচে বা নীল হয়ে থাকার কথাবললাম আমি 
হয়ত পানিতে ধুয়ে গেছে বা মিশে গেছে কাটা যায়গায় অনেকক্ষণ পানি লাগলে রক্ত জমে থাকে না বাইওপ্সি রিপোর্ট কবে পাবা
 জানিনাকিন্তু, আমাদের হাতে সময় কম এর মধ্যে আরও এমন ঘটনা ঘটতে পারে মনে হচ্ছে কোথায় পেয়েছ লাশটা? কয়টায়?’
এখান থেকে প্রায় ছয় কিলো, কাল সন্ধ্যার দিকে
ওখানে একটু যাবো, এখুনি
দশ মিনিটে আমরা পৌঁছে গেলাম অন্ধকার হয়ে গেছে তবুও পাড়ের বাতির আলো নদীর বুকে আলোর ঝিলিক তুলছে পানিতে হাত দিল নৃ তারপর জামা কাপড় ছেড়ে নেমে পড়ল পানিতে পানিতে ভাসতে থাকল, ঠিক যেন একটা মড়া, এই নিথর ভেসে থাকার টেকনিকটা ও জানত নদীটায় জোয়ার ভাটা হয় এ সময় জোয়ারের টান থাকে সেই টানে একটু একটু নড়তে থাকল ও, ঢেউের ধাক্কায় এগুতে থাকল আস্তে আওয়াজ দিল নৃ, সময় নাও আমার হাতঘড়ির স্টপওয়াচটা চালু করলাম কিছুদূর ভেসে এগুতেই ও বলল থামাতে তারপর পানি থেকে উঠে পড়ল দুরত্বটা পা ফেলে মাপল আর সময়টা শুনে নিল
আজ এখানেই শেষ, এবার যাওয়া যাক গাটা ঝেড়ে টি শার্টটা পড়ল ও 
বুঝলাম , লাশটা কতদূর থেকে রওনা হয়েছে তা বুঝার চেষ্টা করছ কিন্তু কত  আগে পানিতে পড়েছে সেটা  বুঝবে কিভাবে ?’
রিগর মর্টিস তদন্তের জন্য খুব এসেনশিয়াল, কিন্তু তোমাদের কোন আগ্রহও নেই, ডাক্তারদের রিপোর্টেই ভরসা তবে যেহেতু আমার পাল্লায় পড়ে গেছই, এবার কিছু সবক নিতেই হবে  কৌতুকী কন্ঠ নৃ
তোমরা সন্ধ্যায় পেয়েছ এই লাশ, তারপর ঘন্টা খানেক পরেই ফ্রিজে তারপর থেকে ধরা যায় অবিকৃত ছিল লাশটা কিন্তু কিছু চেঞ্জ ততক্ষণেই হয়ে গেছে মাসল স্টিফনেস থেকে সেটা বোঝা যায় স্টিফ হবার একটা রেট আছে, সময় যত যাবে, তত বেশি ফ্লেক্সিবিলিটি হারাবে পেশীতন্তু আমি মাসলে আঙুল দাবিয়ে বুঝেছি মৃত্যুর সময়টা লাশ ফ্রিজে ঢোকাবার আরও ঘণ্টা পাঁচেক আগে, তবে সে জন্য ফ্রিজিং ইফেক্ট ডিডাক্ট করতে হয়েছে, সেটারও আরেকটা হিসেব আছে, আর ফ্রিজটার  কন্ডিশনও খুব একটা ভাল ছিল না, কম্প্রেসরের গোলমেলে গুঞ্জনেই বোঝা গেছে সেটা তারপর মাইনাস কর তোমার এক ঘণ্টা থাকল চার ঢেউয়ে লাশ মুভ করছে মিনিটে বিশ গজ তবে জোয়ার ভাটার তালের সাথে এই রেট ওঠানামা করে, সেটারও আরেকটা রেট আছে সব সম্ভাব্য ফ্যাক্টর মিলিয়ে হিসেব করলে প্রায় পাঁচ কিলো দূরে লাশটা ফেলা হয়েছে এখান থেকে পাঁচ কিলো দূরে উজানে একটা গ্রাম আছে, রাধাকান্তপুর, আমি সকালে সাইক্লিং করে বহুবার ক্রস করেছি গ্রামটার একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে, একটু দেখা দরকার কাল সকালে আবার যাবো সাড়ে পাঁচটায় চলে এস

প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে নৃ বাইক নিয়ে বের হয়, ওর পুরনো অভ্যেস
 আমিও এখানে বদলি হবার পর ওর দেখাদেখি একটা কিনেছি যদিও আমাদের কারও চাকরির পক্ষে সেটা সুবিধের না তবুও এই পল্লীময় অপরূপ বাংলায় এসে ও রিস্কটা না নিয়ে পারেনি, আমিও পারলাম না ওর ধারণা, একটা দেশকে ভালবাসতে চাইলে সেটাকে সরেজমিনে দেখা দরকার, ও প্রতিটা ঘাসের কিনারা খুঁজে দেখত, ওর মতে নড়াইলের মত এত সুন্দর জেলা দেশে আর নেই নৃর মাঝে একটা শিল্পীও আছে, ও দারুন আঁকে, আমি অত হয়ত বুঝি না, কিন্তু ভোরে প্যাডেল ঘোরাতে ঘোরাতে গ্রাম বাংলার অসীম সৌন্দর্য বুঝতে আমারও সমস্যা হয়নি তবে রাতজাগা আর সীমাহীন আলসেমির চোটে মাঝে মাঝেই মিস হত অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিলাম রাতেই সাইকেলের টিউবে হাওয়া দিয়ে নিয়েছি শখ করে কেনা মাউন্টেইন বাইক জগন্ময়ের মোড়ে দেখা হল ওর সাথে দুজনে রওনা দিলাম
এত সুন্দর তল্লাটে কে এসব অনিষ্ট করছে, বলত? অনেকদিন শান্তিতেই ছিলাম
 রাস্তার দুপাশে বিস্তীর্ণ সবুজ ফসলের ক্ষেত চোখ জুড়িয়ে দিচ্ছে ঝিরঝিরে শারদ হাওয়া সারা মনে অদ্ভুত শান্তির পরশ বুলিয়ে দিল 
তবুও লম্বা সময় ধরে শান্তি মাঝে মাঝে বোরিং হয়ে যায় টুকটাক কথা বলতে বলতে প্যাডালে চাপ বাড়ালাম দুজন
কেসটা ইন্টারেস্টিং, কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম তুমি এখনও আসছ না কেন? অনেক আগ থেকেই শুনছি কিনা
নিজেই একটু ট্রাই করছিলাম সম্ভবনাময় ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ওর এই অজপাড়াগাঁয়ে চলে আসার কারণটা ধরা যায় সকালের এই বাইকিং থেকে আসলে ও দেশটাকে খুব কাছ থেকে অনুভব করতে চায় ওর একাকিত্ব প্রিয় মনটা আসলে একটা হাইডিং প্লেস খুঁজছিল, মাঠ প্রশাসনের চাকরি ওকে এই সুযোগটা দিয়েছে মজার ব্যাপার হল, ও নিঃসঙ্গতা প্রিয় হলেও মাঝে মাঝেই প্রচণ্ড সোশ্যাল হয়ে উঠে, তবে সেটা নতুন পরিবেশে 
কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলাম রাধাকান্তপুর ইউনিয়নের পাকা রাস্তা থেকে বেরিয়ে লাল ইটের হেরিংবোন রোড চলে গেছে গ্রামের দিকে আমাদের বাইকের সাস্পেনশনগুলো কাজে লাগল গ্রামের সবাই জেগে গেছে মনে হল 
এটা একটা বেদে গ্রাম’, নৃ একটু দূরে থাকতেই ব্রেক কষল 
তারমানে সাপ?’ আমি চমকে উঠলাম!
হ্যাঁ সেটাই সন্দেহ আগের লাশগুলার কোন পরিচয় পেয়েছ?’
হ্যাঁ, কেউ নড়াইলের না একজন তো ছিল পুলিশের এএসআই, বাড়ি নোয়াখালী, পোস্টিং নেত্রকোনা! বাকি সবাইও বেশ দূরে দূরের, সিলেট আর নাটোর কোন যোগসূত্র নেই
আসলে আছে, সবাই একই বয়সের, নবীন যুবা, খুব খারাপ বয়স
খোঁজ নিয়ে জানলাম, গ্রামটার পুরনো ইতিহাস আছে নড়াইলের জমিদাররা তুকতাকে বিশ্বাসী ছিল এই  বেদেরা নাকি অনেক উপকার করেছিল, বিশেষত চিকিৎসা দিয়ে প্রায় একশ বছর ধরে আছে এই গ্রাম তবে বৈদ্যি দিয়ে আর একালে চলে না, খুব কম বেদেই এখন সেটায় আছে, অনেকেই লিখেপড়ে গ্রাম ছেড়েছে আমার মন এবং কিছু ফাইন্ডিংস বলছে, ঘটনার উৎপত্তি এই গ্রামেই কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন’?
আমাকে ভিক্টিমদের ডিটেইলস দিও, যতটুকু পাওয়া গেছে সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট হল ওরা যে মোবাইল ইউজ করত সেগুলোর নম্বর
আমরা তদন্তের জন্য আগেই বের করে রেখেছি সেসব কোন কাজে আসেনি ফোনগুলো একটাও চালু নেই বন্ধ মোবাইল কোম্পানিগুলোকে রিকুয়েস্ট করেছি কললিস্ট দিতে দিয়েছে দেখে দেখে ফোনও করেছি কোন ক্লু নাই, কমন কন্টাক্ট নাই সবার আলাদা আলাদা ফ্রেন্ড বা আত্মীয় কোন কোন ফোন বন্ধ
আমার মনে হয় তোমাদের তদন্তে প্রচুর ত্রুটি আছে অপরিণত আমাকে কললিস্টগুলা পাঠিয়ে দিও আজ গ্রামটা দেখে গেলাম কিন্তু ভেতরে যাবো না সমস্যা আছেদুপুরের মধ্যেই ওর আপিসে পাঠিয়ে দিলাম ফোনের কললিস্ট বিকেলে দেখা করলাম আমরা জানাল, কাজের ফাঁকে সে অনেকগুলো অনুসন্ধান চালিয়েছে মোবাইল কোম্পানিগুলোতে তার বুয়েট লাইফের অনেক ফ্রেন্ড আছে ভিক্টিমরা মারা যাবার আগে বিভিন্ন যায়গায় কল করেছে তবে সবাই একটা কমন রিজিওনে ফ্রিকুয়েন্টলি ফোন করেছে মোবাইলের বেইজ ট্রান্সিভার স্টেশনের লোকেশন বের করে জানা যায় সেগুলো রাজশাহীর আশপাশে সেই কলগুলোর রিসিভার সিমগুলা সবই আনরেজিস্টার্ড তবে কেউই একই নম্বরে রিং করেনি সেই সাথে আছে প্রচুর এসএমএস চালাচালির রেকর্ড মোটাদাগে বোঝা যাচ্ছে সবাই একই ব্যক্তি বা গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করেছে আর সবচেয়ে ভাইটাল খবর হল রাধাকান্তপুরের একজন রাজশাহীর সাথে সংশ্লিষ্ট আর সে এখন সেখানেই আছে বাকিটা অপারেশনের পর বলব
নৃর বুদ্ধিদীপ্ত চোখে একটা রহস্যমাখা কৌতুকের ঝিলিকের সাথে ঠোঁটের কোণে সেই ভুবন কাঁপানো নীরব হাসি, ফাইনাল সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেলে ওটা দেখা দেয় আমি কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম 
ফোর্স রেডি কর, পাখি উড়ে যেতে পারে, যদিও যাবার যায়গা কম, আর সাস্পেক্ট কিন্তু যথেষ্ট ভয়ঙ্কর, সুতরাং সাবধানে থেক  নৃ ওর ফার্স্ট এইড কিট থেকে দুটো শিশি বের করল, একটা ডিস্পোজিবল হাইপোডার্মিক সিরিঞ্জও নিল 
এ যুগে এ দেশে এমন ক্রিমিনাল দেখা যায় না তবে মোটিফটা এখনও জানা গেল না হয়ত জানতে পারব শিগগিরই রিভেঞ্জবা মিসঅ্যান্ড্রি (misandry) মনে হচ্ছে, তারমানে পুরুষ জাতির প্রতি প্রচণ্ড আক্রোশ,হতে পারে স্ত্রীজাতির কোন সদস্য বা তার কোন আত্মীয়ের কাজ তবে আমার মনে হচ্ছে স্রেফ পাগলামো, যদিও, আমি না থাকলে তোমরা ধরতে পারতে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে, অর্থাৎ খুনি ভেবেছে তাকে ধরবে এমন পাবলিক এ তল্লাটে নেই
শেষ বিকেলের আলোয় আমরা পৌঁছে গেলাম রাধাকান্তপুর গ্রামের ভেতর ঢুকলাম শুধু আমি আর নৃ বেদেপল্লী শুনেছি বিচিত্র জায়গা ঢুকলেই নাকি সাপের আঁশটে ঘ্রাণ আসে নাকে বুজরুকী আর রহস্যে ঘেরা পরিবেশ সেখানে নাকি বাচ্চারা বিষাক্ত সাপ নিয়ে খেলা করে খেলনা মনে করে এখানেও তেমন একটা ব্যাপার চোখে পড়ল, কয়েকটা বাচ্চা সাপ নিয়ে খেলছে, তবে নৃ বলল, সাপগুলো নাকি একেবারে নিরীহ জাতের একটা ঢোড়া, আরেকটা দাঁড়াশ দাঁড়াশ নামটা শুনলে কেন যেন ভয়ানক বিষাক্ত মনে হয়, কিন্তু সেটাও নাকি একেবারেই নির্বিষ একটা বাচ্চা ছেলেকে ও শুধাল
সুশোভনা দিদির বাড়ি কোথায়, বলতে পার?’ বাচ্চটা খানিক দূরে দেখিয়ে দিল আমরা হাঁটতে থাকলাম আমি বেশ লম্বা, আর ও মাঝারি হলেও শক্তপোক্ত গড়নের নৃর চেহারায় জেল্লা ঠিকরে বেরুনো একটা ভাব আছে, ও বলে সেটা নাকি কপালভাতি প্রাণায়ামের ফল তবে ওর ফেসটা মানুষকে অ্যাট্রাক্ট করে, একটা আনকমন ম্যাটার আছেবাচ্চাগুলো খানিকদূর আমাদের পিছু নিল নৃ কয়েকটা কয়েন দিয়ে বিদায় দিল
সাসপেক্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যুওলোজির স্টুডেন্ট, প্রচণ্ড মেধাবী, রাধাকান্তপুরে কেন গোটা নড়াইলে অমনটা নেই, অনেক কষ্টার্জন বলব না, বরং মনে হয় গিফটেড ট্যালেন্ট ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল তার মাস্টার্সের থিসিস হল বাঙ্গারাস সেরুলিয়াস  শান্ত গলায় বলছে নৃ 
সাপ নিশ্চয়?’
হ্যাঁ, শাঁখামুঠি বা শাঁখিনী, এই এলাকায় বলে কালাজ বা কানন, ইংরিজি নাম কমন ক্রেইট, অনেক নাম এটার, এদেশে সাপের নামের কোন মা বাপ নাই উপমহাদেশের সব থেকে ভয়ানক সাপ, তবে বিলুপ্তির পথে প্রায় সাইলেন্ট কিলার, কামড়ের দাগও খুব ছোট, নোটিস করাই মুশকিল, কোবরার থেকে আট- নয়গুন বেশি বিষাক্ত কামড়ালে পিঁপড়ের কামড়ের থেকেও কম টের পাওয়া যায় ভয়ানক নিউরোটক্সিক সাপ, ওতে থাকে বাঙ্গারোটক্সিন যেটা স্নায়ুতন্ত্রে নিকোটিনিক অ্যাসিটাইলকোলিন রিসেপ্টারের ওপর কাজ করে দ্রুত মৃত্য ঘটাতে সক্ষম তীব্র ঘুম ঘুম ভাব হয়, হার্ট বন্ধ হয়ে নিঃশব্দে মৃত্যু যন্ত্রণা নাই বললেই চলে মেয়েটার ডিপার্টমেন্টে আমার পরিচিত একজন আছে সব খবর সেই দিল এতক্ষণে বুঝলাম আমাদের টার্গেট একজন নারী 
অদ্ভুত বাড়ি মেয়েটার টিনের ছাদ কিন্তু বেশ পরিপাটি দরজার দুপাল্লায় তেলরঙে দুটো ফণাতোলা সাপের ছবি আঁকা আমাদের দেখে কিছু লোক জড় হতে চলেছিল কিন্তু কেন যেন হল না তার মানে মেয়েটার বাসায় অচেনা লোকদের আনাগোনা বেশ ভালোই
মিস সুশোভনা আছেন?’
আসুন মিস্টার নৈর্ঋত আহমেদরিনরিনে একটা সুরেলা গলা ভেসে এল ঘর থেকে
খবর রেখেছেন দেখি আমার অফিসে এই গ্রামের একজন চাকরি করে, তৌফিক, এখন বুঝতে পারছি সে শুধু আমাকেই এখানকার খবর দেয়নি বরং আমার খবরও এখানে পরিবেশন করেছেশান্ত গলায় বলে ঘরে ঢুকল নৃ পিছনে আমি থমকে গেলাম মেয়েটাকে দেখে নৃ প্রথমে মেয়েটাকে অত ভালভাবে লক্ষ্য না করে সারা ঘরে একবার সতর্ক চোখ বুলাল কিন্তু আমি চোখ ফেরাতে পারছিলাম না প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট হাইট, শ্যামলা রঙ কিন্তু চিকচিক করছে পিচ্ছিল ব্রোঞ্জের মত, পুরাই ম্যাগনেটিক প্রচণ্ড শার্প ডায়ামন্ড শেপের চেহারা, চোখা নাক, টানা চোখে অতল কুহক, ভ্রুদুটো একটু নাচিয়ে রেখেছে চুলগুলো একটা মোটা বেণীতে সাপের মত পেঁচিয়ে খোপা করা মাথার ওপর আর মাথাটা বসান আছে একটা লম্বা মসৃণ গ্রীবার ওপর গ্রীবার নিচ থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত নিখুঁত একটা অবয়ব, ন্যাচারাল নাকি পরিচর্যার ফল বোঝা মুশকিল একটা ডুরে শাড়িতে টাইট করে প্যাঁচানো শরীর, কোন ব্লাউজ নেই, টিপিক্যাল বেদেনীর পোশাক, ত্রিভুবনের সমস্ত আবেদন তাতেই ফুটে উঠছে
 নৈর্ঋত পরে বলেছিল , মেয়েটা নাকি এক্কেবারে জেনুইন শঙ্খিনী জাতের, বাৎস্যায়নের কামসূত্রানুযায়ি নারী চার রকমের, পদ্মিনী, চিত্রানী, শঙ্খিনী আর হস্তিনী হঠাত খেয়াল হল, ঘরের দুই পাশে প্রায় আট দশটা সাপ রাখার ঢাকনাওয়ালা ডালি দুইএকবার ফোঁস ফোঁসও শুনতে পেলাম, শিউরে উঠল গা 
বসেন’,শঙ্খিনী চোখের ইশারায় পালঙ্কটা দেখিয়ে দিল সুশোভনা, ঠোঁটের কোণে একটা মায়াবী হাসি 
আমার বাবা মারা গেছে সাপের কামড়ে অবশ্য কামড়টা অ্যারেঞ্জ করেন আমার মা ক্যারেক্টারলেস ছিল অবশ্য সেটা সব পুরুষই, আপনারা দুজনেও, তাই না?’ বলে খিলখিল করে কৃত্রিম একটা গা জ্বালানো হাসি দিল, আমার কেন যেন শুনতে সাপের হিসহিসানির মত লাগলো 
একটা মাদকতাময় চাহনি দিয়ে আমাদের দিকে তাকাল সুশোভনা, ঢুলুঢুলু চোখের মণিদুটো কাঁপছে, ‘চরিত্রহীনদের বেঁচে থাকার কোন দরকার নাই এই দুনিয়ায় যত ঐ জঞ্জাল সরাতে পারব ততই মঙ্গল আমার পুরস্কার পাওয়া দরকার আমি বেছে বেছে জঞ্জাল সরাচ্ছি আমাকে কেন ধরতে এসেছেন? অবশ্য ধরতে আসলেও পারবেন না আমি ঠিক পালিয়ে যাবো, হুহু’! কথাটা শুনেই চমকে উঠল নৃ
 তৌফিক, সাবধান, মেয়েটা ব্যাঙ্গারাসের কামড় খেয়েছে সাপটা ঘরের ভেতরেই ছাড়া আছে
ঘরের ভেতর না, একেবারে আমার হাতেই আছে!!!বলেই সুশোভনা কোমরের পেছনে রাখা একটা হাত সামনে এনে ছুঁড়ে দিল কাল বেল্টের মত কি যেন, সরাসরি নৃর দিকে নৃর রিফ্লেক্স অসাধারণ, ও সাপটাকে শূন্যেই কায়দা করে ধরে ফেলল খপ করে, তারপর ছুড়ে দিল জানালার বাইরে, একটা পুকুর ছিল, সেখানে গিয়ে পড়ল মেয়েটা ততক্ষণে সংজ্ঞাহীন হয়ে লুটিয়ে পড়েছে মাটিতে 
বাঙ্গারাসের কামড়ে ফ্যাটালিটি খুব হাই অ্যান্টিভেনিন না দিলে প্রায় ১০০% বলে পকেট থেকে শিশি দুটো বের করল ও 
এতে ক্রেইটের প্রতিবিষ আছে বলে একটা অ্যাম্পুল থেকে সিরিঞ্জে তরলটুকু টেনে মেয়েটার শিরায় পুশ করল 
বিষ কাজ শুরু করে দিয়েছে তার ওপর নারভাস টেনশনে ছিল সুইসাইডের আগে সবাই থাকে প্রায় দুবছর ধরে এই জিনিস নিয়ে ঘুরছি, আজ কাজে লাগালাম, অবশ্য কাজে লাগলে হয় অ্যাম্পুলটা পকেটে রেখে সিরিঞ্জটা বাইরে ছুঁড়ে ফেলতে গিয়ে থেমে গেল নৃ একটা কাগজে মুড়ে পকেটে রাখল কি মনে করে 
মেডিকেল ওয়েস্ট যেখানে সেখানে ফেলতে নেই ফোন করে ফোর্স আনালাম
মেয়েটাকে তুললাম গাড়িতে, তারপর সোজা হাসাপাতাল ওখানে যথারীতি অ্যান্টিভেনিন নেই তবে মনে হচ্ছে নৃর অ্যাম্পুলের জলটুকু কাজ করছে মেয়েটার হার্ট রেট স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে আমার সন্দেহ, রিপিটেডলি সুইসাইড অ্যাটেম্পট নেবে, অনেকগুলো মার্ডারের আসামী, তাই কেবিনেই ফোর্স অ্যালার্ট রাখলাম আমার মনে হল মেয়েটা পুরাই পুরুষবিদ্বেষী সাইকো প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছেলেগুলো মেরে ফেলেছে ফেসবুক বা মোবাইল দিয়ে ছেলে হান্টিং করত, তারপর সম্ভবত রাধাকান্তপুরে নির্জন নদীর তীরে তাদের ডেকে সাপের ছোবল খাওয়াত, তারপর ভাসিয়ে দিত বিষে জর্জর অচেতন দেহ যা পরে লাশ হয়ে যেত উদ্ভট ক্যারেক্টার তবে হেরিডিটারি একটা ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু জানলাম, অর্থাৎ হয়ত মায়ের কাছ থেকেই পুরুষালি প্রতারণা সম্পর্কে ধারণা এবং পুরুষবিদ্বেষ দুটোই পাওয়া এমনটা কখনও এদেশে শুনিনি, অবশ্য কত কিছুই না ঘটে দুনিয়ায় শেষমেশ বেচারী ক্লিওপেট্রা হতে গিয়েও পারল না, সেই মিশরীয় সম্রাজ্ঞীও নাকি আক্টিয়ামের যুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানিতে ইজিপশিয়ান গোখরার কামড় নিয়ে আত্মাহুতি দেন সুশোভনা সর্বশেষ শিকার হিসেবে আমাদের দুজনকে ফিক্স করে ফেলেছিল ভাবতেই আবার শিউরে উঠলাম তবে মোদ্দা কথা হল, আর কোন লাশ ভেসে যাবে না চিত্রা নদী বেয়ে ভাবতেই একটা শান্তি পেলাম নৃকে অসংখ্য ধন্যবাদ ব্যপারটার ইতি এত দ্রুত টানার জন্য ও যদিও এসব সস্তা ধন্যবাদের কাঙাল না, বরং নিভৃতে থাকাই ওর প্রিয়, নীরবে কাজ করাতেই ওর সুখ