এক
কামরাটা মাঝারি আকারের । তেমন বড় না আবার ছোট ও না ।
সুসজ্জিত ।
মেঝেতে টাইলস লাগানো,দেয়ালে নীলাভ রঙ এর চুনকাম করা ।
বড় জানালা ।
আসবাবপত্রে ঠাসা ঘরটার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে রেখেছে দেয়ালে ঝোলানো নয়নাভিরাম পেইন্টিংসগুলো ।
এক কোণে ঝুলে থাকা বাতি থেকে নিঃসৃত ইষৎ নীলাভ আলো ঘরের অন্ধকার তো দূর করতে পারছেই না বরং পরিবেশ টা রহস্যময় করে রেখেছে ।
সোফায় হেলান দিয়ে বসে টিভি দেখছে রাফি । টিভি দেখছে না বলে শুধু একটার পর একটা চ্যানেল পাল্টাচ্ছে বলাই ভাল । ফলে টিভির আলোর রঙ এর ও পরিবর্তন হচ্ছে । কখনো সাদা ঘোলাটে,কখনো লালচে,নীলচে,সবুজাভ,কখনো বা আবার বিবর্ন গাছের পাতার মত রঙ লাফালাফি করে আবার সরে যাচ্ছে ।
ফলে ঘরের পরিবেশ আরো রহস্যময় ও ভৌতিক মনে হচ্ছে ।
জানালা দিয়ে হু হু করে ঢুকছে হিমেল বাতাস । দেয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডার দুটি বাতাসের প্রভাবে ক্রমাগত দোল খাচ্ছে ।
হাত উচু করে ঘড়িতে সময় দেখল রাফি । রাত সাড়ে বারোটা । শহরের কর্মব্যাস্ততা কমে এসেছে । রাফির কাজের ও সময় হয়ে গেছে । একটু পরই বেরোতে হবে ।
টিভি বন্ধ করল রাফি । দ্রুত কাপড় বদলে তৈরি হয়ে গেল । ঘর তালা মেরে চাবির রিংটা এক আঙ্গুলে ঢুকিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল ।
দুই
গাড়ি বের করে ড্রাইভিং সিটে বসে একটা সিগারেট ধরাল রাফি ।
গাড়ি স্টার্ট দিল ।
গেইটের কাছে গিয়ে থামতে হলো তাকে ।
গেইট বন্ধ ।
গার্ড কে দেখা যাচ্ছেনা আশেপাশে ।
বিশ্রী ভাষায় গার্ডকে একটা গালি দিল রাফি । তারপর জোরেজোরে হর্ন বাজাতে লাগল ।
সাথে সাথেই আড়াল থেকে দৌড়ে এল গার্ড ।
রাগের চোটে ওর উপর দিয়েই গাড়ি উঠিয়ে দিল রাফি । তীব্র আর্তনাদ বেড়িয়ে এল গার্ড এর কন্ঠ থেকে । ডানদিকের দুটি চাকা তার মাথার উপর দিয়ে চলে গেল । মাথা চ্যাপ্টা হয়ে মগজ ছিটকে গিয়ে পড়ল কয়েক গজ সামনে । গার্ডের নিথর দেহ পড়ে রইল ইট বিছানো রাস্তায় ।
গাড়ি থামিয়ে নেমে এল রাফি । সামান্যতমও বিচলিত মনে হচ্ছেনা তাকে । চেহাড়ায় অপরাধবোধ বা অনুতাপের ছাপ লেশমাত্র নেই । এ ধরনের ঘটনার সাথে সে পরিচিত । এ কারণে অনুভূতিগুলো ভোতাঁ হয়ে গেছে হয়তো ।
নিচু হয়ে লাশটার দিকে ঝুকে পড়ে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করল রাফি । তারপর মুখ দিয়ে চুকচুক ধরনের শব্দ করতে করতে উঠে দাড়িয়ে সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে ওপরের দিকে ধোয়া ছাড়ল । এরপর শান্ত ভঙ্গিতে হেঁটে গাড়ির পিছনের দিকে গেল ।
ডালাটা উঠাল ।
সেখান থেকে লাফ দিয়ে নামল একটা প্রাণী । শারিরীক কাঠামো মানুষের মতই কিন্তু দেখতে বিভৎস । জট পাকানো ধূসর রঙ এর এক ঝাক চুল তার মুখটা ঢেকে রেখেছিল । লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নামার সময় চুলগুলো পিছনের দিকে সরে যায় এবং তার কুৎসিত ও ভয়ংকর চেহারাটা তখন দৃশ্যমান হয় ।
চোখের জায়গায় দুটি গর্ত এবং তাতে কিলবিল করছে অস্যংখ্য পোকা ।
মুখমন্ডলের বাকি অংশ দগদগে ঘায়ে ভরা ।
চোয়াল ঠেলে বেরিয়ে আসা ভয়ংকর দাঁতগুলো খুবই নোংরা ।
হা করে থাকা মুখ থেকে চিকন জিভ বেরিয়ে এসে লকলক করে ঝুলছে ।
নাক-মুখ বেয়ে টপটপ করে গড়িয়ে পড়ছে থিকথিকে আঠালো তরল ।
একে দেখে একই সাথে ভয় এবং ঘেন্না দুই ধরনের অনুভূতিই হতে পারে ।
একে দেখে মনে হয় যেন নরক থেকে উঠে এসেছে কোন পিশাচী ।
পিশাচীটা গাড়ি থেকে নেমেই হামাগুড়ি দিয়ে চলে গেল লাশের কাছে । তারপর লাশ থেকে কিছুটা সামনে পড়ে থাকা মগজটা তুলে নিয়ে মুখে পুড়ে চিবুতে লাগল ।
এরপর টান মেরে ছিড়ে ফেলল হতভাগ্য গার্ডের শার্ট ।
ডাক্তাররা যেভাবে চামড়ার নিচে ইনজেকশন পুশ করেন ঠিক সেভাবে একটা হাত ঢুকিয়ে দিল লাশটার বুকের ভেতর । থোকায় থোকায় রক্ত ছিটকে পিশাচীর গালে এসে লাগল । লকলকে জিভ বের করে রক্তটুকু চেটে খেয়ে নিল সে । হাতটা যখন বের করে আনল লাশের বুক থেকে,তখন তার হাতে দেখা গেল রক্তমাখা হৃদপিন্ড । ফোটা ফোটা রক্ত পড়ছে ওটা থেকে ।
প্রথমে হৃদপিন্ডে লেগে থাকা রক্ত গুলো চেটেপুটে খেয়ে নিল পিশাচীটা । এরপর আস্ত হৃদপিন্ড টা মুখে পুরে চপচপ শব্দ করে চিবিয়ে খেতে লাগল । ঠোটের কোনা দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়তে লাগল আর লকলকে জিভ দিয়ে ঠোটের চারপাশের রক্ত চেটে খেতে লাগল সে ।
এরপর ওর মুখটা নামিয়ে আনল লাশের ক্ষত বিক্ষত বুকের ওপর । বুকে লেগে থাকা রক্ত চুকচুক শব্দ করে চেটেপুটে খেয়ে নিল । এতকিছুর পরও ওর রক্তপিপাসা বা ক্ষুধা মিটলনা । তাই রাস্তায় পড়ে থাকা পুডিং এর মত জমাটবাধা রক্ত খাবলে খেতে শুরু করল । তারপর রাস্তার যেখানে যেখানে রক্ত লেগে ছিল সেখানটায় চেটে একদম পরিষ্কার করে দিল । পিশাচীর দুই হাত তখন রক্তে মাখামাখি । একটা একটা করে আঙ্গুল মুখে ঢুকিয়ে চুষে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলল ।
অবশেষে যেন ক্ষুধা তৃষ্ণা মিটল এই ভয়ংকর পিশাচীর ।
যেখান থেকে এসেছিল,হামাগুড়ি দিয়ে আবার সেখানেই ফিরে গেল সে । মাটিতে দু'পা ভর দিয়ে লাফ দিয়ে গাড়ির পেছনের সংকীর্ন জায়গাটিতে উঠে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়ল । সাথে সাথে ডালাটা নামিয়ে দিল রাফি ।
কামরাটা মাঝারি আকারের । তেমন বড় না আবার ছোট ও না ।
সুসজ্জিত ।
মেঝেতে টাইলস লাগানো,দেয়ালে নীলাভ রঙ এর চুনকাম করা ।
বড় জানালা ।
আসবাবপত্রে ঠাসা ঘরটার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে রেখেছে দেয়ালে ঝোলানো নয়নাভিরাম পেইন্টিংসগুলো ।
এক কোণে ঝুলে থাকা বাতি থেকে নিঃসৃত ইষৎ নীলাভ আলো ঘরের অন্ধকার তো দূর করতে পারছেই না বরং পরিবেশ টা রহস্যময় করে রেখেছে ।
সোফায় হেলান দিয়ে বসে টিভি দেখছে রাফি । টিভি দেখছে না বলে শুধু একটার পর একটা চ্যানেল পাল্টাচ্ছে বলাই ভাল । ফলে টিভির আলোর রঙ এর ও পরিবর্তন হচ্ছে । কখনো সাদা ঘোলাটে,কখনো লালচে,নীলচে,সবুজাভ,কখনো বা আবার বিবর্ন গাছের পাতার মত রঙ লাফালাফি করে আবার সরে যাচ্ছে ।
ফলে ঘরের পরিবেশ আরো রহস্যময় ও ভৌতিক মনে হচ্ছে ।
জানালা দিয়ে হু হু করে ঢুকছে হিমেল বাতাস । দেয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডার দুটি বাতাসের প্রভাবে ক্রমাগত দোল খাচ্ছে ।
হাত উচু করে ঘড়িতে সময় দেখল রাফি । রাত সাড়ে বারোটা । শহরের কর্মব্যাস্ততা কমে এসেছে । রাফির কাজের ও সময় হয়ে গেছে । একটু পরই বেরোতে হবে ।
টিভি বন্ধ করল রাফি । দ্রুত কাপড় বদলে তৈরি হয়ে গেল । ঘর তালা মেরে চাবির রিংটা এক আঙ্গুলে ঢুকিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল ।
দুই
গাড়ি বের করে ড্রাইভিং সিটে বসে একটা সিগারেট ধরাল রাফি ।
গাড়ি স্টার্ট দিল ।
গেইটের কাছে গিয়ে থামতে হলো তাকে ।
গেইট বন্ধ ।
গার্ড কে দেখা যাচ্ছেনা আশেপাশে ।
বিশ্রী ভাষায় গার্ডকে একটা গালি দিল রাফি । তারপর জোরেজোরে হর্ন বাজাতে লাগল ।
সাথে সাথেই আড়াল থেকে দৌড়ে এল গার্ড ।
রাগের চোটে ওর উপর দিয়েই গাড়ি উঠিয়ে দিল রাফি । তীব্র আর্তনাদ বেড়িয়ে এল গার্ড এর কন্ঠ থেকে । ডানদিকের দুটি চাকা তার মাথার উপর দিয়ে চলে গেল । মাথা চ্যাপ্টা হয়ে মগজ ছিটকে গিয়ে পড়ল কয়েক গজ সামনে । গার্ডের নিথর দেহ পড়ে রইল ইট বিছানো রাস্তায় ।
গাড়ি থামিয়ে নেমে এল রাফি । সামান্যতমও বিচলিত মনে হচ্ছেনা তাকে । চেহাড়ায় অপরাধবোধ বা অনুতাপের ছাপ লেশমাত্র নেই । এ ধরনের ঘটনার সাথে সে পরিচিত । এ কারণে অনুভূতিগুলো ভোতাঁ হয়ে গেছে হয়তো ।
নিচু হয়ে লাশটার দিকে ঝুকে পড়ে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করল রাফি । তারপর মুখ দিয়ে চুকচুক ধরনের শব্দ করতে করতে উঠে দাড়িয়ে সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে ওপরের দিকে ধোয়া ছাড়ল । এরপর শান্ত ভঙ্গিতে হেঁটে গাড়ির পিছনের দিকে গেল ।
ডালাটা উঠাল ।
সেখান থেকে লাফ দিয়ে নামল একটা প্রাণী । শারিরীক কাঠামো মানুষের মতই কিন্তু দেখতে বিভৎস । জট পাকানো ধূসর রঙ এর এক ঝাক চুল তার মুখটা ঢেকে রেখেছিল । লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নামার সময় চুলগুলো পিছনের দিকে সরে যায় এবং তার কুৎসিত ও ভয়ংকর চেহারাটা তখন দৃশ্যমান হয় ।
চোখের জায়গায় দুটি গর্ত এবং তাতে কিলবিল করছে অস্যংখ্য পোকা ।
মুখমন্ডলের বাকি অংশ দগদগে ঘায়ে ভরা ।
চোয়াল ঠেলে বেরিয়ে আসা ভয়ংকর দাঁতগুলো খুবই নোংরা ।
হা করে থাকা মুখ থেকে চিকন জিভ বেরিয়ে এসে লকলক করে ঝুলছে ।
নাক-মুখ বেয়ে টপটপ করে গড়িয়ে পড়ছে থিকথিকে আঠালো তরল ।
একে দেখে একই সাথে ভয় এবং ঘেন্না দুই ধরনের অনুভূতিই হতে পারে ।
একে দেখে মনে হয় যেন নরক থেকে উঠে এসেছে কোন পিশাচী ।
পিশাচীটা গাড়ি থেকে নেমেই হামাগুড়ি দিয়ে চলে গেল লাশের কাছে । তারপর লাশ থেকে কিছুটা সামনে পড়ে থাকা মগজটা তুলে নিয়ে মুখে পুড়ে চিবুতে লাগল ।
এরপর টান মেরে ছিড়ে ফেলল হতভাগ্য গার্ডের শার্ট ।
ডাক্তাররা যেভাবে চামড়ার নিচে ইনজেকশন পুশ করেন ঠিক সেভাবে একটা হাত ঢুকিয়ে দিল লাশটার বুকের ভেতর । থোকায় থোকায় রক্ত ছিটকে পিশাচীর গালে এসে লাগল । লকলকে জিভ বের করে রক্তটুকু চেটে খেয়ে নিল সে । হাতটা যখন বের করে আনল লাশের বুক থেকে,তখন তার হাতে দেখা গেল রক্তমাখা হৃদপিন্ড । ফোটা ফোটা রক্ত পড়ছে ওটা থেকে ।
প্রথমে হৃদপিন্ডে লেগে থাকা রক্ত গুলো চেটেপুটে খেয়ে নিল পিশাচীটা । এরপর আস্ত হৃদপিন্ড টা মুখে পুরে চপচপ শব্দ করে চিবিয়ে খেতে লাগল । ঠোটের কোনা দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়তে লাগল আর লকলকে জিভ দিয়ে ঠোটের চারপাশের রক্ত চেটে খেতে লাগল সে ।
এরপর ওর মুখটা নামিয়ে আনল লাশের ক্ষত বিক্ষত বুকের ওপর । বুকে লেগে থাকা রক্ত চুকচুক শব্দ করে চেটেপুটে খেয়ে নিল । এতকিছুর পরও ওর রক্তপিপাসা বা ক্ষুধা মিটলনা । তাই রাস্তায় পড়ে থাকা পুডিং এর মত জমাটবাধা রক্ত খাবলে খেতে শুরু করল । তারপর রাস্তার যেখানে যেখানে রক্ত লেগে ছিল সেখানটায় চেটে একদম পরিষ্কার করে দিল । পিশাচীর দুই হাত তখন রক্তে মাখামাখি । একটা একটা করে আঙ্গুল মুখে ঢুকিয়ে চুষে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলল ।
অবশেষে যেন ক্ষুধা তৃষ্ণা মিটল এই ভয়ংকর পিশাচীর ।
যেখান থেকে এসেছিল,হামাগুড়ি দিয়ে আবার সেখানেই ফিরে গেল সে । মাটিতে দু'পা ভর দিয়ে লাফ দিয়ে গাড়ির পেছনের সংকীর্ন জায়গাটিতে উঠে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়ল । সাথে সাথে ডালাটা নামিয়ে দিল রাফি ।
এতক্ষণ
নির্বিকার ভঙ্গিতে দাড়িয়ে থেকে এইসব পৈশাচিক কর্মকান্ড দেখছিল সে । প্রতিক্রিয়া বলতে শুধু
দু চোখের কোণে অশ্রু জমে থাকতে দেখা গেল,আর কিছুইনা ।
ব্যাস্ত হয়ে পড়ল রাফি ।
তার এখন অনেক কাজ ।
লাশটা কে সরিয়ে ফেলতে হবে দ্রুত,জায়গাটা ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে । আরো অনেক কাজ ।
কেউ দেখে ফেলার আগেই সব কাজ সারতে হবে ।
তিন
রাফির জীবনটা বড় অদ্ভুত ।
দরিদ্র পরিবারে জন্মেছিল । দারিদ্রের কষাঘাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার না হতেই কাজে লেগে পড়তে হয় তাকে । জীবনে অনেক কষ্ট করেছে সে । চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে মরতে দেখেছে মাকে । সেই থেকে প্রতিজ্ঞা করে টাকা কি জিনিস তা দেখে নেবে সে । একদিন দুহাত ভরে টাকা ওড়াবে । তার সেই লক্ষ পূরনের পথ সহজ হয়ে যায় এক মাদক ব্যাবসায়ীর হাতে পড়ার পর । বর্তমানে রাফি নিজেই একজন মাদকসম্রাট । টাকা পয়সা,বাড়ি গাড়ি কোন কিছুরই অভাব নেই তার । অভাব শুধু একটা জিনিসের । প্রাচুর্যের মাঝেও সে একটা জিনিসের অভাব বোধ করে । তা হলো মাতৃস্নেহ ।
ব্যাস্ত হয়ে পড়ল রাফি ।
তার এখন অনেক কাজ ।
লাশটা কে সরিয়ে ফেলতে হবে দ্রুত,জায়গাটা ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে । আরো অনেক কাজ ।
কেউ দেখে ফেলার আগেই সব কাজ সারতে হবে ।
তিন
রাফির জীবনটা বড় অদ্ভুত ।
দরিদ্র পরিবারে জন্মেছিল । দারিদ্রের কষাঘাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার না হতেই কাজে লেগে পড়তে হয় তাকে । জীবনে অনেক কষ্ট করেছে সে । চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে মরতে দেখেছে মাকে । সেই থেকে প্রতিজ্ঞা করে টাকা কি জিনিস তা দেখে নেবে সে । একদিন দুহাত ভরে টাকা ওড়াবে । তার সেই লক্ষ পূরনের পথ সহজ হয়ে যায় এক মাদক ব্যাবসায়ীর হাতে পড়ার পর । বর্তমানে রাফি নিজেই একজন মাদকসম্রাট । টাকা পয়সা,বাড়ি গাড়ি কোন কিছুরই অভাব নেই তার । অভাব শুধু একটা জিনিসের । প্রাচুর্যের মাঝেও সে একটা জিনিসের অভাব বোধ করে । তা হলো মাতৃস্নেহ ।
মা
কে ফিরে পাবার এক আকুলতা সবসময়ই রাফি কে তাড় করে বেড়াত । মূত মানুষকে কখনো ফিরে
পাওয়া যায়না,তারা কখনো ফিরে আসেনা এই সত্যটাকে রাফি
কখনো মন থেকে মেনে নিতে পারেনি । মার কথা ভেবে ব্যাকুল হয়ে থাকত ।
একদিন কেউ একজন বলল যে তান্ত্রিকরা মৃত আত্মাদের সাথে মানুষের যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারে । এ কথা শুনে রাফির নিরানন্দ জীবনে যেন প্রাণের সঞ্চার হল । খুশিতে তার মন যেন খাচা থেকে মুক্ত পাখির মত হয়ে গেল । খুব উৎসাহ নিয়ে ক তান্ত্রিকের কাছে গেল রাফি । তান্ত্রিক রাফির বাড়িতে এসে চক্র বসাল ।
আমাবশ্যা রাত । আকাশে এক ফোটা আলো পর্যন্ত নেই । রাফির ঘরের মেঝেতে বাদুড়ের রক্ত মেখে তার ওপর পদ্মাসন করার ভঙ্গিতে চক্রে বসল তান্ত্রিক । গোরস্থান থেকে চুরি করা এক লাশের কাফনের কাপড় পরিধান করে রাফি ও বসল চক্রে ।
বাইরে যেমন ঘুটঘুটে অন্ধকার,তেমনি ভিতরেও ।
বিড়বিড় করে কিসব মন্ত্র পড়ছিল তান্ত্রিক ।
হঠাৎ তার মন্ত্র পড়া থেমে গেল । কোন এক অশরিরীর অস্তিত্ব অনুভব ররল রাফি । বাতাসে কেমন একটা অচেনা গন্ধ ।
"নে কথা বল,তোর মায়ের আত্মা এসে গেছে"
অদ্ভুত বাচনভঙ্গিতে বলল তান্ত্রিক ।
রাফি তার মায়ের আত্মার সাথে কথা বলা শুরু করল । কথা বলতে পারলনা একটুও,শুধুই হাউমাউ কান্না । …
একদিন কেউ একজন বলল যে তান্ত্রিকরা মৃত আত্মাদের সাথে মানুষের যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারে । এ কথা শুনে রাফির নিরানন্দ জীবনে যেন প্রাণের সঞ্চার হল । খুশিতে তার মন যেন খাচা থেকে মুক্ত পাখির মত হয়ে গেল । খুব উৎসাহ নিয়ে ক তান্ত্রিকের কাছে গেল রাফি । তান্ত্রিক রাফির বাড়িতে এসে চক্র বসাল ।
আমাবশ্যা রাত । আকাশে এক ফোটা আলো পর্যন্ত নেই । রাফির ঘরের মেঝেতে বাদুড়ের রক্ত মেখে তার ওপর পদ্মাসন করার ভঙ্গিতে চক্রে বসল তান্ত্রিক । গোরস্থান থেকে চুরি করা এক লাশের কাফনের কাপড় পরিধান করে রাফি ও বসল চক্রে ।
বাইরে যেমন ঘুটঘুটে অন্ধকার,তেমনি ভিতরেও ।
বিড়বিড় করে কিসব মন্ত্র পড়ছিল তান্ত্রিক ।
হঠাৎ তার মন্ত্র পড়া থেমে গেল । কোন এক অশরিরীর অস্তিত্ব অনুভব ররল রাফি । বাতাসে কেমন একটা অচেনা গন্ধ ।
"নে কথা বল,তোর মায়ের আত্মা এসে গেছে"
অদ্ভুত বাচনভঙ্গিতে বলল তান্ত্রিক ।
রাফি তার মায়ের আত্মার সাথে কথা বলা শুরু করল । কথা বলতে পারলনা একটুও,শুধুই হাউমাউ কান্না । …
এমন
সময় রাফির মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল,সাথে জ্বলে উঠল আলো । আর এতেই যত বিপত্তি বাধল ।
আলো জ্বলে ওঠার কারনে চক্র ভেঙ্গে গেল ।
রাফি দেখল তার সামনে একটা জীবন্ত বিভীষিকা দাড়িয়ে আছে । যেমন কুৎসিত তেমন ভয়ংকর ও বিভৎস । দেখলে গা ঘিনঘিন করে । মনে হয় যেন নরকের কীট ।
জিনিসটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রাফি । মূর্তির মত দাড়িয়ে রইল কয়েক মুহূর্ত । সম্বিত ফিরে পেল তান্ত্রিকের কথায় ।
"সর্বনাআআআআশ !মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে রে !
চক্র তো ভেঙ্গে গেল,এখন একে ফেরত পাঠাবার তো কোন উপায় নেই । মানুষ আর আত্মার মধ্যবর্তী এক সত্তা হয়ে তোর মা এখন পৃথিবীতে থাকবে । এটা তোর মা রে বাছা,এটা তোর মা । ও কে খেতে দিতে হবে সদ্যমৃত লাশের রক্ত,মাথার মগজ আর হৃদপিন্ড । "
এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে তারপর চলে গেল তান্ত্রিক ।
সেই থেকে শুরু হল এই অভিশপ্ত অধ্যায় ।
এখন প্রতিরাতে রাফি তার মায়ের এই সত্তাকে নিয়ে বাইরে যায় । ইচ্ছাকৃতভাবে কোন পথচারীকে গাড়ির চাকায় পিস্ট করে,তারপর তার পিশাচী রুপি মা পৈশাচিক ভোজনে মেতে উঠে । এভাবেই কেটে যাচ্ছে দিনের পর দিন । মাসের পর মাস...
অভিশপ্ত এখ দীবন পার করছে রাফি এবং তার মা ।
আলো জ্বলে ওঠার কারনে চক্র ভেঙ্গে গেল ।
রাফি দেখল তার সামনে একটা জীবন্ত বিভীষিকা দাড়িয়ে আছে । যেমন কুৎসিত তেমন ভয়ংকর ও বিভৎস । দেখলে গা ঘিনঘিন করে । মনে হয় যেন নরকের কীট ।
জিনিসটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রাফি । মূর্তির মত দাড়িয়ে রইল কয়েক মুহূর্ত । সম্বিত ফিরে পেল তান্ত্রিকের কথায় ।
"সর্বনাআআআআশ !মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে রে !
চক্র তো ভেঙ্গে গেল,এখন একে ফেরত পাঠাবার তো কোন উপায় নেই । মানুষ আর আত্মার মধ্যবর্তী এক সত্তা হয়ে তোর মা এখন পৃথিবীতে থাকবে । এটা তোর মা রে বাছা,এটা তোর মা । ও কে খেতে দিতে হবে সদ্যমৃত লাশের রক্ত,মাথার মগজ আর হৃদপিন্ড । "
এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে তারপর চলে গেল তান্ত্রিক ।
সেই থেকে শুরু হল এই অভিশপ্ত অধ্যায় ।
এখন প্রতিরাতে রাফি তার মায়ের এই সত্তাকে নিয়ে বাইরে যায় । ইচ্ছাকৃতভাবে কোন পথচারীকে গাড়ির চাকায় পিস্ট করে,তারপর তার পিশাচী রুপি মা পৈশাচিক ভোজনে মেতে উঠে । এভাবেই কেটে যাচ্ছে দিনের পর দিন । মাসের পর মাস...
অভিশপ্ত এখ দীবন পার করছে রাফি এবং তার মা ।
চার
দীর্ঘ সময় নিয়ে গোসল সেরে রুমের সাথে লাগোয়া বারান্দায় সে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসল রাফি ।
একটা সিগারেট ধরিয়ে ঠোটে ঝুলিয়ে রেখে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল সে । আকাশটা অন্ধাকার । এক ফালি রুপালী চাঁদ এই অন্ধকার আকাশের বুকে কিছুটা আলোর সঞ্চার করে রেখেছে । রাফির এই অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনে এই রকম একটা চাঁদের অভাব অনুভব করল । ওর মনটা ছেয়ে আছে কাল মেঘে । বুক ভরা শুধু কষ্ট আর হাহাকার ।
কেন এমন হল ? রাফি তো এটা চায়নি,এই অভিশপ্ত জীবন আর কতদিন ? এর কি কোনই শেষ নেই?
রাফি প্রায় সময়ই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোজার চেষ্টা করে কিন্তু খুজেঁ পায়না কখনো ।
সিগারেট টা ছুড়ে ফেলে দিল রাফি ।
কানে হেডফোন লাগিয়ে একটা গান শুনতে লাগল । প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এই গানটা শোনে সে ।
একটা চাঁদ ছাড়া রাত আধাঁর কালো
মায়ের মমতা ছাড়া কে থাকে ভাল
মাগো মা,মাগো মা
তুমি চোখের এত কাছে থেকেও
দূরে কেন বলো না,মাগো মা.....
হঠাৎ কিছু একটা দেখে চমকে উঠল রাফি ।
একটা ছায়ামূর্তী ।
যেন বাতাসে ভেসে ভেসে এগিয়ে আসছে রাফির দিকে । জানালার লোহার গ্রীল ভেদ করে রাফির সামনে এসে দাড়াল মূর্তীমান বিভীষিকাটি । এক পসক ও কে দেখেই আত্মা কেফে উঠল রাফির ।
এটা যে গার্ডের বিকৃত লাশ । মাথাটা থেতলানো,বুকের কাছে একটা গর্ত ।
চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে ক্ষতস্থান থেকে ।
শরীর দুলিয়ে হেসে উঠল পিশাচটা ।
ভয়ের একটা শীতল স্রোত প্রবাহিত হলো রাফির পিঠ বেয়ে । বুক ধুকপুক করছে তার । ভয়ে চোখ দুটো খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ ডিমের মত হয়ে গেল । কিছুই বুঝতে পারছেনা রাফি । শুধু বুঝতে পারছে তার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে ।
একের পর এক বিভিন্ন দৃশ্য ভেসে উঠল চোখের সামনে । কোনটা আনন্দের,কোনটা আবার কষ্টের ।
মায়ের আদরমাখা সুন্দর মুখখানি ভেসে উঠল চোখের সামনে । রাফির খুব ইচ্ছে হল মায়ের গালে,কপালে চুমু খাবে । কিন্তু তা আর যম্ভব হলনা । গার্ডের পিশাচটার শক্ত দু'হাতের চাপায় মাথা থেকলে গেল রাফির । মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু ওলট পালট হয়ে গেল । মুখমন্ডলের ওপর কিছু তরল বেয়ে পড়ল । আস্তে আস্তে চিন্তা চেতনা সবকিছু লোপ পেতে শুরু করল ।
ধীরে ধীরে চোখ দুটি বুজে আসতে লাগল ।
সম্পুর্নভাবে জ্ঞান হারোনোর আগে রাফি দেখল তার মা তার মুখের ওপর লেগে থাকা তরল গুলো চেটেপুটে খাচ্ছে ।
একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল রাফির বুক থেকে ।
দু চোখ জলে ভরে গেল তার ।
শেষ নিশ্বাস ফেলার আগমুহূরতে রাফি মিনমিন করে বলল,
দীর্ঘ সময় নিয়ে গোসল সেরে রুমের সাথে লাগোয়া বারান্দায় সে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসল রাফি ।
একটা সিগারেট ধরিয়ে ঠোটে ঝুলিয়ে রেখে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল সে । আকাশটা অন্ধাকার । এক ফালি রুপালী চাঁদ এই অন্ধকার আকাশের বুকে কিছুটা আলোর সঞ্চার করে রেখেছে । রাফির এই অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনে এই রকম একটা চাঁদের অভাব অনুভব করল । ওর মনটা ছেয়ে আছে কাল মেঘে । বুক ভরা শুধু কষ্ট আর হাহাকার ।
কেন এমন হল ? রাফি তো এটা চায়নি,এই অভিশপ্ত জীবন আর কতদিন ? এর কি কোনই শেষ নেই?
রাফি প্রায় সময়ই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোজার চেষ্টা করে কিন্তু খুজেঁ পায়না কখনো ।
সিগারেট টা ছুড়ে ফেলে দিল রাফি ।
কানে হেডফোন লাগিয়ে একটা গান শুনতে লাগল । প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এই গানটা শোনে সে ।
একটা চাঁদ ছাড়া রাত আধাঁর কালো
মায়ের মমতা ছাড়া কে থাকে ভাল
মাগো মা,মাগো মা
তুমি চোখের এত কাছে থেকেও
দূরে কেন বলো না,মাগো মা.....
হঠাৎ কিছু একটা দেখে চমকে উঠল রাফি ।
একটা ছায়ামূর্তী ।
যেন বাতাসে ভেসে ভেসে এগিয়ে আসছে রাফির দিকে । জানালার লোহার গ্রীল ভেদ করে রাফির সামনে এসে দাড়াল মূর্তীমান বিভীষিকাটি । এক পসক ও কে দেখেই আত্মা কেফে উঠল রাফির ।
এটা যে গার্ডের বিকৃত লাশ । মাথাটা থেতলানো,বুকের কাছে একটা গর্ত ।
চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে ক্ষতস্থান থেকে ।
শরীর দুলিয়ে হেসে উঠল পিশাচটা ।
ভয়ের একটা শীতল স্রোত প্রবাহিত হলো রাফির পিঠ বেয়ে । বুক ধুকপুক করছে তার । ভয়ে চোখ দুটো খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ ডিমের মত হয়ে গেল । কিছুই বুঝতে পারছেনা রাফি । শুধু বুঝতে পারছে তার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে ।
একের পর এক বিভিন্ন দৃশ্য ভেসে উঠল চোখের সামনে । কোনটা আনন্দের,কোনটা আবার কষ্টের ।
মায়ের আদরমাখা সুন্দর মুখখানি ভেসে উঠল চোখের সামনে । রাফির খুব ইচ্ছে হল মায়ের গালে,কপালে চুমু খাবে । কিন্তু তা আর যম্ভব হলনা । গার্ডের পিশাচটার শক্ত দু'হাতের চাপায় মাথা থেকলে গেল রাফির । মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু ওলট পালট হয়ে গেল । মুখমন্ডলের ওপর কিছু তরল বেয়ে পড়ল । আস্তে আস্তে চিন্তা চেতনা সবকিছু লোপ পেতে শুরু করল ।
ধীরে ধীরে চোখ দুটি বুজে আসতে লাগল ।
সম্পুর্নভাবে জ্ঞান হারোনোর আগে রাফি দেখল তার মা তার মুখের ওপর লেগে থাকা তরল গুলো চেটেপুটে খাচ্ছে ।
একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল রাফির বুক থেকে ।
দু চোখ জলে ভরে গেল তার ।
শেষ নিশ্বাস ফেলার আগমুহূরতে রাফি মিনমিন করে বলল,
"মাগো,তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও মা,ক্ষমা করে দিও,আমার জন্যেই আজ তুমি এই অভিশপ্ত জীবন অতিবাহিত
করছ,তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও..."
বেচারা রাফি হয়তো আরো কিছু বলতে চেয়েছিল । কিন্তু তার আগেই তার দেহ থেকে প্রাণবায়ু বেরিয়ে গেল ।
~~~~~~~~~~~~~~×~~~~~~~~~~~~
বেচারা রাফি হয়তো আরো কিছু বলতে চেয়েছিল । কিন্তু তার আগেই তার দেহ থেকে প্রাণবায়ু বেরিয়ে গেল ।
~~~~~~~~~~~~~~×~~~~~~~~~~~~