আমাদের পরবর্তী সংখ্যায় লেখা পাঠাতে চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ এ ইনবক্স করুন অথবা ইমেইল করুন Ghuri2014@hotmail.com এই ঠিকানায়।

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫

একজন সালমান গণি - মোঃ মীযানূর রহমান নিয়ন (৩য় সংখ্যা)




২০১৪ সালের জুলাই মাসের কোন এক বিকেল গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে সেই সকাল থেকেই আকাশের বোবা কান্না যেন থামতেই চায় না অদ্য ষাটের কোঠায় পা রাখা রিক্সা ড্রাইভার সালমান গনি সারাদিন থেকে বাসায় বসে আছেন বাসা বলতে সিলেট শহরের কোন এক অখ্যাত নোংরা বস্তিতে একটি ঝোপড়ি ঘড়,পলিথিনের কাগজ দিয়ে কোনরকমে বৃষ্টির পানি আটকে রাখার ব্যর্থ ব্যবস্থা ঘরের কয়েক জায়গায় টিনের প্লেট আর ছোট বাটি বিছিয়ে রাখা চুয়ে পরা পানি যাতে ঘর ভিজিয়ে না দেয় সেজন্য 
ঘরে চাল ফুরিয়ে এসেছে প্রায় তবু আজ রিক্সা নিয়ে বেরুতে পারে নি বৃষ্টির কারণে মনে মনে বৃষ্টিকে একশো একবার অভিশাপ দিতে থাকলেন তিনি গতরাত থেকেই শরীরে জ্বর বাসা বেধেছে সাথে হাঁপানির সমস্যটা তো আছেই এই বৃষ্টিতে ভিজে রিক্সা টানলে পরিণাম যে কতটা ভয়াবহ হবে সেটা আন্দাজ করেই বের হননি আজ
মানসিক বিকারগ্রস্থ বৌটা বিছানায় পরে ঘুমুচ্ছে আর ঝোপড়ির দরজায় একটা জলচৌকি নিয়ে বসে আছেন সালমান গণি আকাশের দিকে একমনে চেয়ে আছেন আর ভাবছেন কিছু একটা আপাতত সন্তানহীন তিনি,এই এক পাগল বৌ নিয়েই তার সংসার একটা মেয়ে ছিল, সালেহা নাম ছিল মেয়েটির সালেহার কথাই ভাবছেন তিনি আর ভাবছেন সেই দিন গুলির কথা
আজ থেকে ৪৩ বছর আগের সেই দিন গুলি তার কাছে মনে হয় যেন ৪৩ ঘন্টা আগের ঘটনা ১৭ বছরের এক কিশোর ছিলেন তখন তিনি সিলেট শহরের অদূরের এক পাড়াগাঁয়ে ভালই কাটছিল তার কৈশোরের অন্তিম দিনগুলি বন্ধুদের সংগে দূরন্তপনায় আর দশটা গ্রাম্য ছেলের কৈশোর যেমন কাটে তেমন কাটছিল পড়ালেখা বেশিদূর এগোয় নি সবচেয়ে কাছের স্কুলের দূরত্ব বাড়ি থেকে সাড়ে চার মাইল তাই পাড়ার পাঠশালার পাট চুকিয়েই ইস্তফা দিয়েছিলেন লেখাপড়ায়
আজকের মতই সারাদিন থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন মামুনদের বাড়ির আলগা ঘরে মিনহাজ,মামুন,শুভ আর মৌমিদির সাথে জোড় বিজোড় খেলছিলেন তেঁতুল বিচি দিয়ে তাদের খেলায় মনোসংযোগের ব্যাঘাত ঘটাল বিকট একটা শব্দ ঠাওর করা গেল শব্দটা বাজারের দিক থেকেই এসেছে মৌমিদির বারন স্বত্বেও এই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই শব্দের উৎসের খোজে ছুটলেন সালমান গণি বন্ধু মামুন আর মিনহাজকে নিয়ে শুভ আসতে চাইলেও মৌমিদির হাত থেকে ছাড়া পায় নি বেচারা আর বয়সে অনেক ছোট শুভ না আসাতে বরং ভালই হল তাদের
সানিদের জংলাটা পেরুতেই এরকম আরো কয়েকটা শব্দ হল
 তারা আরো বেশি কৌতূহলী হয়ে উঠেছিলেন ফলে তাদের দ্রুত হাঠাটা দৌরে রূপ নিল বাজারের কাছের ল্যাংড়া খালের পারে আসতেই ফিসফিস করে কে যেন নিচু হতে তাগাদা দিল তাদের সালমান গণিই প্রথম দেখলেন লম্বা চুল আর মুখভর্তি খোচাখোচা দাড়িওয়ালা সেই লোকটাকে আবার ইশারা করে মাথা নিচু করতে বলল তাদের আর দেরী করলেন না সালমান গণি নুয়ে পড়ে নিজেকে আড়াল করে ফেললেন উদ্যত ধানগাছের আড়ালে মিনহাজ আর মামুন কিছুটা অবাক হলেও অনুসরণ করেছিল তাকে টিপ টিপ করে দু এক ফোটা বৃষ্টি ঝড়ছিল তখনো ক্রল করে ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে এলেন সেই লোকটি খাকি পোশাক পরনে আর হাতে ছিল একটা মেশিনগান (যদিও তখন তিনি চিনতেন না মেশিনগান নামে একটা কিছু আছে যার একটা বুলেট ই একটা প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট) অদ্ভূত এই লোকটাআমার পেছন পেছন আসোবলে তাদেরকে সাথে নিয়ে ক্রলিং করার মতই অনেকটা পথ পেরিয়ে ধানক্ষেতের ওপারে বটগাছটার পেছনে নিয়ে গেলেন
সেখানে গিয়ে আরো অবাক হয়েছিলেন সালমান গণি ও তার বন্ধুরা
 আরো গোটা সাতেক অদ্ভুত লোক,সবার কাঁধেই রাইফেল-মেশিনগান তাদের আগমনের পর নেতা-গোছের বয়স্ক একজন লোকের ইশারায় আরেকজন মেশিনগান নিয়ে ধানক্ষেতের দিকে চলে গেলেন
একটা ভাঙ্গা রেডিয়োতে সবাই মনোযোগ দিয়ে কি যেন শুনছিলেন
 তাদের উপস্থিতিতে ভলিয়মটা একটু বাড়িয়ে দেয়া হল বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ রিলে করে শোনানো
হচ্ছিল তখন স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে সবার সাথে সালমান গণি ও তার বন্ধুরাও মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগলেন সালমান গণির গা কাটা দিয়ে উঠল ভাষণ শেষে খবর শোনে শিরা উপশিরার রক্তকণিকায় বিদ্রোহী নাচন অনুভূত হল, চোখমুখ লাল হয়ে উঠল সন্ধ্যার পশ্চিম আকাশের মত কেউ একজন মাঝখান থেকে বলে উঠলওগো মিলিটারিরা আবাল-বৃদ্ধ যারে যেখানে পাইতেছে গুলি কইরা মারতাছে আরেকজন বললেনমা-বোনদেরকেও রেহাই দিচ্ছেনা পশ্চিমা শূয়র গুলা “বাংলায় রাজত্ব কায়েম করার দুঃসাহস করেছে ওরা,শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও ওদেরকে বাংলা থেকে বিতাড়িত করতে হবেবললেন নেতা-গোছের বয়স্ক লোকটি অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা তিনি,এ দলের কমান্ডার আবার বললেন তিনিতাদের বিরুদ্ধে বাংলার জনতা এক হয়ে লড়াই করছে,আজ কাল বা পরশু জয় আমাদের হবেই হবে
দেশে কি একটা গন্ডগোল চলছিল তা আগেই লোকমুখে শুনেছিলেন সালমান গণিরা
 এখানে এসে ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে মাথায় ঢুকল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আর খবর শুনে কোন কিছুই বুঝার বাকি নেই এখন বাজারেও নাকি মিলিটারি এসেছে ক্যাম্প করেছে ইউনিয়ন আপিসে তাদের ক্যাম্পে গেরিলা আক্রমণের জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা মোট ১২ জনের টিমে আরো ৩ জন সদস্য বাড়ল মোট ১৫ জনের গেরিলা টিম যদিও নতুন ৩ জনের কাছে কোন অস্ত্র ছিলনা কিন্তু তাদের কাছে ছিল আরো বড় এক অস্ত্র মনোবল আর সাহস বাড়িতে কেউ কিছু না জানিয়েই যোগ দিলেন মুক্তিযুদ্ধে
তারা ৩ জন ছিলেন ঐ টিমের সবচেয়ে কম বয়সী সদস্য আর তাদের কাছে অস্ত্রও ছিলনা তাই তাদেরকে সম্মুখ যুদ্ধে না নিয়ে অন্য এক দায়িত্ব দেওয়া হল
 পাক বাহিনীর গতিবিধি লক্ষ্য করাই ছিল তাদের কাজ ল্যাংড়া খালের পাশে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থেকে ইউনিয়ন আপিসের উপর নজর রাখছিলেন তারা সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায় বৃষ্টিপড়া বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই লালচে আভা ছড়িয়ে পরেছে পশ্চিম দিগন্তে যেন এ বাংলার নিরীহ মানুষের বুক থেকে ঝড়ে যাওয়া রক্ত দিয়েই সৃষ্টিকর্তা সাজিয়েছেন আজকের আকাশের পশ্চিম দিকটা 
সেই সকালে খেয়ে খেলতে এসেছিলেন তিন জনই
 এখনও পেটে আর কোন দানাপানি পরে নি কিন্তু সেইদিকে কারো কোন খেয়াল নেই নিবিষ্ট চিত্তে তাকিয়ে আছেন ইউনিয়ন আপিসের দিকে আপিসের সামনের দিকটায় মোট ৬ জন মিলিটারি ৩ টা পজিশনে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে আপিসের বারান্দায় আছে আরো কয়েকজন,বাকিরা ভেতরে
পালা করে আধাঘণ্টা পর পর সালমান গণি,মিনহাজ আর মামুন পাক বাহিনীর গতিবিধির
আপডেট দিয়ে আসছিলেন টিম কমান্ডারের কাছে
সন্ধ্যার একটু পরে ঈশানকোণ কালো করে আবারো বৃষ্টি নামল
 মুশলধারে বৃষ্টি ঝড়ছে ইউনিয়ন আপিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মিলিটারিরা বারান্দায় গিয়ে আশ্রয় নিল কয়েকজন ঢুকে গেলো আপিসের ভেতরের একটা কামড়ায় 
তারা সারাদিন থেকে এই বৃষ্টিটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন
 এখনই তাদের আক্রমণ করার মোক্ষম সুযোগ একটা হ্যারিকেন জালিয়ে বটগাছ তলায় মিটিং বসল চূড়ান্ত আক্রমণের পূর্বে মনোবল বাড়াতে আর সবাইকে যার যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে কমান্ডার সাহেব মিটিং ডেকেছেন প্রথমত প্ল্যান ছিল সোজা সাকো দিয়ে খাল পেরিয়ে সামনের দিক থেকে আক্রমণ করা হবে ইউনিয়ন আপিস কিন্তু সালমান গণি বাধ সাধলেন এতে তিনি বললেনসামনর দিক থাকি আক্রমণ খরলে আমরা সজে তারার চখুত পরিযিমু অতার দায় হাকোমে (সাকো) দি না পার ঐয়া বাজারর দখনে দি গাঙ পার ঐয়া তারারে আমরা ইউনিয়ন আপিসর ডাইন দিক থাকি আক্রমণ করলেই ভালা ঐব বয়সে কাঁচা সালমান গণির বুদ্ধিমত্তা আর বিচক্ষণতা দেখে কমান্ডার সাহেব মুগ্ধ না হয়ে পারলেন না তবে সালমান গণির বন্ধু মিনহাজ ও কম যান না তিনি বললেনআমরা সবে একবায় দি না গিয়া যদি দুই ভাগ ঐয়া দুই দিক থাকি আক্রমণ করি তাইলে আরো ভালা ঐব মনে অর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হল তাদের আইডিয়া মতেই আক্রমণ করা হবে ইউনিয়ন আপিস
ছোট্ট খালটা সাঁতরে পার হতে মিনিট খানেক সময় ও লাগল না
 অস্ত্রগুলো পানি থেকে উঁচুতে রেখে এক হাতে সাঁতার কেটে খাল পার হলেন তারা বৃষ্টির তুমুল শব্দে চাপা পরে গেল তাদের সাঁতরে খাল পার হওয়ার শব্দটা খালটা পেরিয়েই দুইটা দলে ভাগ হয়ে পরল গেরিলা টিমটা এক দলে থাকলেন সালমান গণি কমান্ডার সাহেবের সাথে অন্য দলে মিনহাজ আর মামুন তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল ঐদিন কারণ মুশলধারে বৃষ্টির কারণে ইউনিয়ন আপিসের পেছনের দিকের সবকটা জানালাই বন্ধ করে দিয়েছিল মিলিটারিরা কলিম কাকার দোকানের পেছন দিয়ে চিরচেনা পথটা দিয়ে মিলিটারিদের চোখকে ফাকি দিয়ে সালমান গণি তার দলটাকে ইউনিয়ন আপিসের বাম দিকে নিয়ে গেলেন বাজারের হিন্দু দোকানিদের প্রায় সব দোকানগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল পাকিরা সাথে অনেক মুসলিম দোকানির দোকান ও পুড়েছে হরিহর কাকার মিষ্টির দোয়াকনের পেছনের পাগারটায় বেশ কয়েকটা লাশ এলোমেলোভাবে পরে থাকতে দেখা গেল এদেরকে গুলি করে মারার সময় শব্দ শুনেছিলেন সালমান গণিরা
বুলুদের মুদির দোকানের বাম দিকের গলি দিয়ে অন্য টিমটাকে ইউনিয়ন আপিসের বাম দিকে পৌঁছে দিলেন মিনহাজ ও মামুন
 পূর্বপরিকল্পনা মত ডান দিক থেকে হুইসেলের শব্দ আসতেই অস্ত্রের গর্জন শুরু হল সালমান গণিদের দেয়ালের আড়ালেই থাকার নির্দেশ দিয়ে বাকিরা ঝাঁপিয়ে পরলেন ইউনিয়ন আপিসের ভেতরে ডান দিক থেকেও আসলেন অন্যরা অতর্কিত
আক্রমণে পাক বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র হাতে তোলে নেওয়ার ই সু্যোগ পেলনা মাত্র মিনিট দশেকের মধ্যেই ২৫ জন পাক মিলিটারিকে খুন করে ইউনিয়ন আপিস দখল করলেন তারা আল্লাহর অশেষ রহমতে তাদের সবাই অক্ষত অবস্থায় ছিলেন প্রচুর গোলাবারুদ আর বিস্ফোরক পেয়ে কমান্ডার সাহেব কি খুশিই না হয়েছিলেন সেদিন
ঐদিন রাতে মিনহাজদের বাড়িতে উনাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল
 যদিও এত রাতে বাড়ি ফেরার অপরাধে মিনিহাজের বাবা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন পরে কমান্ডার সাহেব আর তার সহযোদ্ধাদের দেখে, তাদের মুখ থেকে ছেলের বীরত্বের কাহীনি শোনে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন পরেরদিন সকালে সালমান গণি,মিনহাজ আর মামুন গ্রামের সবার আছ থেকে বিদায় নিয়ে কমান্ডার ও তার সহযোদ্ধাদের সাথে মুক্তি ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সেখানে তাদেরকে পনেরো দিনের বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হয় এরপর মূল গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেন তারা ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের দিন নাগাদ যুদ্ধ করেছিলেন সালমান গণি
তার এখনও স্পষ্ট মনে আছে মাথায় গুলি লাগার পর মিনহাজের অপলক চাহনি
 পাক বাহিনীর হাতে ধরা পরার পর মামুনকে কি নির্মম ভাবেই না হত্যা করা হয়েছিল নদীর পারে তার লাশ আনতে গিয়ে বাম পাজরে গুলি লাগে তার একটুর জন্য হৃদপিণ্ডে লাগেনি এরপর একমাস মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে চিকিৎসা নিয়ে আবার যুদ্ধে ফেরা যেন গেল সপ্তাহের ঘটে যাওয়া ঘটনা
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গ্রামে ফিরে যান সালমান গণি
 বিয়ে করেন বাবার ইচ্ছায় ঘর আলো করে আসে চাঁদের মত ফুটফুটে সুন্দর কন্যাশিশু সালেহা বাবার মৃত্যুর মাস খানেক পরেই মা ও চলে যান সালমান গণিকে ছেড়ে অজানার দেশে পৈতৃক সম্পত্তি বলতে ঐ বসবাসের ভিটে-টুকোই বর্গা চাষ করেই পেট চলত তাদের বাবার মৃত্যুর পর তার দ্বারা কৃষিকাজ সম্ভব হয়নি আর তাই পেটের দায়ে স্ত্রী কন্যা নিয়ে সিলেট শহরে পাড়ি জমান
সালেহা তখন পনেরো পেরিয়ে ষোলতে পা দিল
 একদিন বাড়ি ফিরে সালমান গণি শোনেন মেয়ে তার স্কুল থেকে এখনো বাড়ি ফেরে নি সারারাত পাগলের মত খোজেছেন মেয়েকে কোথাও পান নি শেষে সকালে কেউ একজন এসে খবর দিল বাজারে যাওয়ার রাস্তার পাশে নাকি সালেহার লাশ পরে থাকতে দেখেছে সালমান গণির বৌ সে কথা শোনেই জ্ঞান হারালেন জ্ঞান ফেরার পর থেকেই পাগলের মত হয়ে যান তিনি,এখনো পাগল ই মেয়েটার লাশের দিকে তাকিয়েই হাউমাউ করে কেঁদে উঠেছিলেন সালমান গণি শরীরটা খুবলে খেয়েছে যেন কোন হিংস্র হায়েনা মুক্তিযুদ্ধের সময় এমন বর্বরতার শিকার হয়েছিল বাংলার হাজার হাজার নারী কিন্তু দেশ তো তখন স্বাধীন ছিল যখন তার মেয়ের উপর............... এসব ভাবতে ভাবতে কয়েক ফোটা বৃষ্টি তার রুক্ষ মলিন চিবুক ছুঁয়ে ঝড়ে পরল বৃষ্টি কমে এসেছে প্রায় মাথায় একটা পলিথিন বেধে বেরিয়ে পড়লেন সালমান গণি নিজে নাহয় উপোষ করতে পারবেন কিন্তু পাগলি
বৌটা......
?